গোধূলি উপন্যাসের বুক রিভিউ; লেখক আনিসুল হক
আজকের আলোচনা "গোধূলি" বইটি নিয়ে। বইটি লিখেছেন "আনিসুল হক"
গ্রামের প্রথমিক বিদ্যালয়য়ের শিক্ষিকা রোকেয়া বেগম। তাঁর ৩ ছেলে ১ মেয়ে কাজের মেয়ে শিরিন। ১। মাসুদ তাঁর স্ত্রী গৃহবধু শামীমা ২। মুরাদ ও সুজানা; আর্কিটেক্ট দম্পত্তি ৩। মারুফ – সাংবাদিক, গালফ্রেন্ডঃ মুনা ৪। মেয়েঃ মল্লিকা ও তাঁর সন্তানঃ মেয়ে কান্তা (৭) । শান্তা (৫) হঠাৎ রোকেয়া বেগম পড়ে গিয়ে কোমরে একটু ব্যাথা পেয়েছে। ফলে তাঁর শারীরিক অবনতি দেখা দিয়েছে। এই কথা জানতে পেরে তাঁর সকল সন্তানদের কথায় তিনি শহরের পথে পা বাড়িয়েছেন চিকিৎসা করাবেন বলে। কিন্তু শুরুতেই রেল স্টেশনে তাকে নিতে যেতে পারেন নাই তাঁর ছোট ছেলে মারুফ। খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ গালফ্রেন্ডকে সময় দিতে যেয়ে। যাইহউক কোন রকম মেনেজ করে সে তাঁর বড় ছেল মাসুদের বাসায় উঠে। রোকেয়া বেগমের বড় ছেলের বউ যেহেতু গৃহিনী তাই তাঁর তেমন বাহিরে যাতায়াত না থাকায় মাসুদের উপরই ডাক্তার দেখানোর ভার পড়ে। কিন্তু বাস্তবতা দাঁড়ায় এমন যে তাঁর হরেক রকম কাজের ফাঁকে মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যেতে সময় হয়ে উঠে না। তাই তিনি তাঁর মেজো ভাইয়ের বউ সুজানাকে রিকুয়েস্ট করে ডাক্তার দেখিয়ে আনতে। সুজানা যথেষ্ট চেষ্টা করেছে শাশুড়ি মাকে যথাযথ সেবা ও সম্মান করতে। তিনি তাকে ডাক্তার দেখান। যখন রোকেয়া বেগমের উপস্থিতি বড় বউ শামীমার আর ভালো লাগছিলো না ও নিয়মিত ঝগড়া হচ্ছিল তখন এই সুজানাই রোকেয়া বেগমকে তাঁর বাসায় নিয়ে আসে। কিন্তু হায় তাঁর পেটের সন্তানের দূব্যবহারের ফলে সেখানেও তাঁর থাকার সময়টা বেশী ছিলো না। পরে তাঁর আশ্রয় হয় মেয়ের বাসায়। কিন্তু মেয়ের শাশুড়ীর নানামুখী অসদ্বাচরনের কারণে সেখানথেকেও তাকে চলে আসতে হয়। অবশেষে তাকে তাঁর ছোট ছেলে মারুফের মেসে উঠানো হয় কিন্তু সেখানেও তাঁর বসবাস স্থায়ী হয় নাই। পরিষেশে তাঁর ডাক্তারের সহায়তায় তাঁর চিকিৎসা চলাকালে থাকার মত একটা জায়গা মেনেজ হয়। ঐদিকে তাঁর বাড়ির কাজে মেয়ে শিরিন তাঁর জন্যে চিন্তা আর কান্না কাটি করে অস্থির হয়ে উঠে যা তাঁর আপন সন্তানদের মধ্যে দেখা যায় না। বইটিতে আসলে বাধ্যক্যের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। যদিও সন্তানরা ভালো কোথাও যেয়ে সেটেল হয়ে মা বাবাকে সেখানে নিয়ে আসতে চায় কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তাদের কতটুকু খেয়াল রাখতে পারে বা রাখে সেটা এক বড় প্রশ্ন! এই গল্পেও আমরা দেখি রোকেয়া বেগমের সকল সন্তানদের কত অভিযোগ কেন তিনি বাড়ি পড়ে আছেন। কিন্তু বাস্তবতা যদি তিনি শহরে আসলেন তখনই ফুটে উঠেছে। এই গল্পে লেখক আধুনিক সমাজের অন্যতম অবক্ষয় যা প্রেমের নামে হচ্ছে তাঁর কিছুটা চিত্রও তুলে ধরার চেষ্ঠা করেছেন। এই অশ্লিল কর্মকান্ড ও চিন্তাধারা থেকে আমাদের তরুণ ও যুব সমাজকে দূরে থাকা আবশ্যক। অন্যথায় সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হবে।#bookreview #banglabookreview #বইরিভিউ #বুকরিভিউ #বাংলাবুক
No comments